তৎকালীন ”লাত” আর বর্তমান ”শাহজালাল” প্রায় অভিন্ন


তৎকালীন ”লাত” আর বর্তমান ”শাহজালাল” প্রায় অভিন্ন !

তোমরা কি ভেবে দেখেছ লাত ও উযযা সম্বন্ধে? এবং তৃতীয় আরেকটি মানাত সম্বন্ধে?” – সুরা নজম ১৯।

”এগুলো কতক নাম মাত্র যা তোমাদের পুর্ব পুরুষরা ও তোমরা রেখেছ, যার সমর্থনে আল্লাহ কোন দলিল প্রেরণ করেননি। তারা তো অনুমান এবং নিজেদের প্রবৃত্তিরই অনুসরণ করে, অথচ তাদের নিকট তাদের রবের পথ নির্দেশ এসেছে।” সুরা নজম ২০।

আসলেই কি আমরা ভেবে দেখেছি তৎকালীন ”লাত” আর বর্তমানে ”শাহজালাল” সম্পর্কে ! আশ্চর্জ মিল রয়েছে! মিল রয়েছে তৎকালীন মুশ্রিকদের সাথে বর্তমান নামধারী মুসলমানদের!

তৎকালীন ”লাত” আর বর্তমান ”শাহজালালের” মাজারের মধ্যে কোন পার্থক্য আছে কি? একটু যাচাই করে দেখুন তো ! দলিল সহ উপস্থাপন করছি, আপনি শুধু যাচাই করবেন এবং মূল্যায়ন করবেন।

বর্তমান যুগের শাহজালালের মাজার, বায়েজিদ বোস্তামির মাজার, শাহ পরানের মাজার, তথা পীর আওলিয়ার মাজারের বিশয়ে আমাদের দেশের মানুষ খুব সেন্সেটিভ। এগুলোর বিরুদ্ধে বললেই মানুষ ভীত হয়ে উঠে!

অথচ আজকে থেকে প্রায় ১৪৩০ বছর আগেই এরকম কিছুই ছিল জা থেকে রাসুল (সাঃ) সতর্ক করেছেন।

লাত, উযযা, মানাত সহ অসংখ্য মুর্তির পূজা করত মুশ্রিক্রা। কুরানে কেবল এই তিনটির নাম এসেছে কারন এদেরই বেশি খ্যাতি ছিল।

তৎকালীন লাত আর বর্তমান শাহজালালের মাজারের মধ্যে কোন পার্থক্য পাবেন না আপনি !

সুরা নজমের তাফসির, তাফসির ইবনে কাসির এর বাংলা অনুবাদ ৭ম খন্ড ২৭ পারা, পৃষ্ঠা ১৪৩ থেকেঃ

আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) মুজাহিদ (রাঃ) এবং রাবী ইবনে আনাস (রহঃ) বলেন যে,
”জাহিলিয়াত আমলে ”লাত” নামক একজন সৎ লোক ছিল। হজ্জের মৌসুমে সে হাজিদের পানির সাথে ছাতু মিশিয়ে পান করাতো। তার মৃত্যুর পর জনগণ তার কবরের খিদমত করতে শুরু করে এবং ধীরে ধীরে তার ইবাদতের প্রচলন শুরু হয়। (তাবারী ২২/৫২৩)

অন্যত্র ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, ”লাত” সে ছিল এক ব্যক্তি যে হাজিদের ছাতু গুলিয়ে বিতরণ করত। (ফাতহুল বারী ৮/৪৭৮)

লাত ছিল একটি সাদা পাথর যা অংকিত ও নকশাকৃত ছিল। অর উপর গম্বুজ নির্মান করা হয়েছিলো। অর উপর তারা গিলাফ উঠিয়েছিল। অর জন্য তারা খাদেম, রক্ষক ও ঝাড়ুদার নিযুক্ত করেছিলো। অর আশেপাশের জায়গাকে তারা হারামের মত মর্যাদা সম্পন্ন মনে করত।

আপনি জানলেন এই মাত্র যে ”লাত” কে ছিল কিভাবে লাতের পূজা আরম্ভ হয়।

মিলিয়ে দেখুন হুবুহু একই কাজ বর্তমানেও,

শহজালাল (রাহঃ) একজন পুণ্যবান ব্যক্তি ছিলেন। তিনি এই দেশে ইসলাম প্রচারে বিশেষ ভূমিকা রেখেছিলেন, তিনি একজন সৎ লক ছিলেন, পুণ্যবান ছিলেন। 
তিনি মারা গেলেন, লোকেরা তার কবরকে খিদমত করা শুরু করল। বর্তমানে মাজার বানিয়ে তাতে সিজদাও দেয়া শুরু করল, তার কাছে চাওয়া শুরু করল।

এখানে কিন্তু ”লাত”র ও কোন দোষ নাই আর শাহজালাল (রহঃ) এরও কোন দোষ নাই, দোষ কিন্তু সব জনসাধারণের।

১/ ”লাত” একজন সৎ লোক ছিলেন —— ”শাহজালাল”ও একজন সৎ লোক ছিলেন।

২/ লাত হাজিদের খেদমত করতেন —- শাহজালাল বাংলাদেশে ইসলামের প্রচার ও মুসলমানদের হিন্দু জমিদারদের বিপরীতে সাহায্য করতেন।

৩/ লাত মারা যাওয়ার পর জনগণ তার কবরের খেদমত শুরু করে —– শাহজালাল মারা যাওয়ার পরেও জনগণ তার কবরের খেদমত শুরু করে।

৪/ লাত এর কবরে একসময় নকশাকৃত পাথর বসানো হয়, গম্বুজ বানানো হয়, গিলাফ চড়ানো হয় —— শাহজালালের কবরকে পাকা করা হয়েছে তার উপর গম্বুজ বানানো হয়েছে সেখানেও গিলাফ চড়ানো হয়!

৫/ লাত এর মাজারে খাদেম ঝাড়ুদার ও রক্ষক নিযুক্ত করা হয় ——- শহজালাল এর মাজারেও খাদেম ঝাড়ুদার ও রক্ষক নিযুক্ত করা হয়েছে!

৬/ আল্লাহ বলছেন লাত কে ইবাদত করার সমর্থনে কোন দলিল প্রেরণ করেন নি —— শহজালালের কবর কে ইবাদত করার সমর্থনেও কোন দলিল নাই!

৭/ তারা তো অনুমান এবং নিজেদের প্রবৃত্তিরই অনুসরণ করে, অথচ তাদের নিকট তাদের রবের পথ নির্দেশ এসেছে। ———— বর্তমানেও লোকেরা নিজেদের অনুমান ও প্রবৃত্তিরই অনুসরণ করে চলেছে অথচ আল্লাহর স্পষ্ট নিদর্শন কুরান ও হাদিস রয়েছে যে কবরের কাছে কিছুই চাওয়া যাবেনা, কবর পাকা করা যাবেনা।

তৎকালীন সময়ের জন্য আল্লাহ বলছেন, 
”তোমরা কি ভেবে দেখেছ লাত ও উযযা সম্বন্ধে? এবং তৃতীয় আরেকটি মানাত সম্বন্ধে?” – সুরা নজম ১৯।

বর্তমান সময়ের জন্য এই একই আয়াত আমাদেরকে চোখে আঙ্গুল দিয়ে বলছে,

”তোমরা কি ভেবে দেখেছ শহজালাল, শাহ পরান, বায়েজিদ বোস্তামী, মাইজভাণ্ডারী, আজমিরী শরীফ সম্বন্ধে?”

আসলেই আমরা কি ভেবে দেখেছি?আমরা আসলেই ভেবে দেখিনি যদি দেখতাম তাহলে এইভাবে হুবুহু ১৪৫০ বছর আগেকার কাফের মুশ্রিকদের হুবুহু অনুসরণ করতাম না আর মুসলমান বলেও দাবী করতাম না।

আজকে এগুলো নতুন বানানো কথা নয়। মাজার পূজারিদের কথা ঠিকই শুনেন কিন্তু কুরানে হাদিসে কি বল আছে তা কিন্তু আমরা কেউ জানতেই চাই না। তাফসির গ্রন্থ কিনে সাজিয়ে রাখি কিন্তু পড়িনা। যদি কুরানের অর্থ বুঝ এপড়তাম অনুবাদ ও তাফসির সহ পড়তাম তাহলে আমরা জানতে পারতাম। কিন্তু আমরা তো রিডিং পরেই খালাস। হ্যাঁ রডিং পড়লেও সোয়াব আছে । কিন্তু জানার জন্য অর্থ ও তাফসিরও আমাদের পড়তে হবে।

দেখুন এখন উপমহাদেশে যত মাজার আছে সেগুলো দিয়ে মানুষের অজ্ঞতার সুযোগে, মানুষের সেন্টিম্যান্ট কাজে লাগিয়ে কিভাবে শিরকের মধ্যে টেনে নিচ্ছে !

দুঃখিত! হয়ত অনেককেই বুঝাতে পারলাম না।

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে।